পদ্মনাভ অধিকারী
বেলা দশটার ট্রেন ছেড়ে, দ্রুতপায়ে সোজা এসে
দাঁড়ালাম চিত্রার মোড়ে – জনতার মঞ্চে
বয়ান শুনলাম, শুরু হবে পদযাত্রা।
এমনিভাবে একবার মানুষের স্রোতে
হেঁটেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সময়-বয়স তখন ছিল বারো।
বিয়াল্লিশ বছর পর, আবার এসে দাঁড়ালাম
দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির আহ্বানে
নাচে গানে মাতোয়ারা, কারো হাতে বাজে একতারা
কারো বলিষ্ঠ হাতের স্পর্শে বেজে যাচ্ছে ঢোল,
মাথার উপরে তীক্ষ সূর্য্য-বাতাসে তবু প্রাণের হিল্লোল!
পদযাত্রা শুরু হলো, একজন ফাঁসীতে ঝুলবে
সেই আনন্দে চলতে গিয়ে থমকে দাঁড়াই আমি,
একজন বয়স্কা মহিলা তাড়কা রাুসির মত দেহ
বিরামহীন বলেই চলেছে, একটা নোংরা গলির মুখে দাঁড়িয়ে।
“ও ভারানীর ছলেরা ও পারানীর মায়েরা,
আমার ভাতার, তার ভাতার, ওর ভাতার যদি
সেদিন রাজাকার না হোতো, যদি আমার বুনিরি
পাক সিনাদের হাতে না তুলে দিতো, তাহলি দেশ নংকা সাফ হোয়ে যাতো।
মুক্তিযুদ্ধাগের গুষ্টি মারতো, পুড়ায়ে জ্বালায়ে দিতো গিরামের পর শহর।
আমার এক বুন দিয়ে হাজার মা-বুনরি ন্েয করিছি।
নাজাকার-নাজাকার করতিছিস? উরা ছিলো বলেই দেশটা
পাইছিস। ও ভারানির ছলেরা, আমার মতো তুরাও তোগের
বুকি পাষাণ দিতি পারিসনে ক্যান?
ক্যান বাধালি ঝুক্কি ঝামেলা?
ক্যান জ্বালাতি চাচ্ছিস আগুন? পদযাত্রায় এলো সে অবশেষে –
মিনতি করে জানতে চাইলাম নাম,
পাচিবিবি আমি, নোকের বাড়ি বাসন মাজে খাই, কিসির সম্মান ॥”